মিছিলে মিটিংয়ে না যেয়েও ‘টিয়ার গ্যাস’য়ের পাল্লায় পড়তেও হতে পারে। এই গ্যাসের প্রভাব নিষ্ক্রিয় করার কয়েকটি পন্থা রয়েছে। আজ আমি’আবু শোইয়েব খান ওসামা’ এই বিষয়ে কিছু সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া চেষ্টা করেছি।
টিয়ার গ্যাস বা কাঁদানে গ্যাস (ইংরেজি: Tear gas) এর অন্য নাম(ক্লোরোপিকরিন) কয়েক ধরনের রাসায়নিক যৌগের একীভূত নামকরণ। প্রকৃতপক্ষে এটি কোন গ্যাস নয়। মিহি গুড়ো পাউডার কিংবা তরলের অতি ক্ষুদ্রকণার সমষ্টি নিয়ে এ গ্যাস গঠিত। গুড়োয় ক্ষারজাতীয় রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। এর প্রভাবে চোখে প্রচণ্ড জ্বালা-যন্ত্রণার উপস্থিতি ঘটায়। সাময়িকভাবে টিয়ার গ্যাসের প্রভাবে সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চোখ অন্ধত্বের পর্যায়ে উপনীত হয়। অন্যতম রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে পরিচিত টিয়ার গ্যাসের প্রভাবে মনুষ্য চক্ষুর কর্নিয়ার স্নায়ুগুলো আক্রান্ত হয়। এরফলে অঝোর ধারায় কান্না, ব্যথা, এমনকি অন্ধ হয়ে যাবারও সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ১৯১৪ সালে জাইলিল ব্রোমাইড জনপ্রিয় টিয়ার গ্যাসের উপাদানরূপে ব্যবহৃত হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও এর প্রয়োগ হয়েছে। ওসি, সিএস, সিআর, সিএন বা ফিনাসিল ক্লোরাইড, ননিভ্যামাইড, ব্রোমোয়াসিটন, জাইলিল ব্রোমিড, পেঁয়াজ থেকে সংগৃহীত সাইন-প্রোপ্যানেথিয়াল-এস-অক্সাইড যৌগের সম্বন্বয়ে টিয়ার গ্যাস তৈরী করা হয়।
➪ টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত হলেঃ
মিছিলে মিটিংয়ে না যেয়েও ‘টিয়ার গ্যাস’য়ের পাল্লায় পড়তেও হতে পারে। এই গ্যাসের প্রভাব নিষ্ক্রিয় করার কয়েকটি পন্থা রয়েছে। টিয়ার গ্যাস রাসায়নিক অস্ত্র। তবে প্রাণঘাতী নয়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে টিয়ার গ্যাস-বিষয়ক একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই গ্যাসের প্রভাবে মৃত্যু না হলেও তাৎক্ষণিকভাবে নানারকম ক্ষতি করতে পারে। যেমন- ত্বকে ও মুখে জ্বালাপোড়া করা, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা এবং গ্যাসের কারণে দেখতে সমস্যা হওয়া।
যে কোনো কারণেই হোক, টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত হলে যা করতে হবে-
• টিয়ার গ্যাসে আচ্ছাদিত জায়গা থেকে যত দ্রুত সম্ভব সরে আসতে হবে।
• বাতাসের দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে। এতে বাতাসের প্রবাহে টিয়ার গ্যাস আপনার পেছনে চলে যাবে, ফলে চোখ ও মুখ গ্যাস থেকে রক্ষা পাবে।
• ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে চোখে দেওয়া পানি যেন কাপড় ও চামড়ায় না পড়ে। তাই মুখ নিচু করে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে।
• শরীর এবং পোশাকও ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুতে হবে। গরম পানি কখনও ব্যবহার করা যাবে না। কারণ গরম পানি লোমকূপ বড় করে দেয়। ফলে রাসায়নিক পদার্থ শরীরের ভেতর আরও বেশি প্রবেশ করে। যে কারণে ত্বকে জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে। আর টিয়ার গ্যাসের প্রভাব সম্পূর্ণ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত গোছল করা যাবে না।
এই গ্যাসের প্রভাবে স্থায়ী ক্ষতি না হলেও সঠিকভাবে নিষ্কৃয় ও অপসারণ না করলে শরীরে দীর্ঘক্ষণ অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে এর প্রভাব মুক্ত হয়ে অবশ্যই দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Discussion about this post