ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা কোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এবং এই বিষয়ে সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আসামীর বিবৃতি অথবা দোষ স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার ক্ষমতা আলোচনা করা হয়েছে।

আলোচনা ও প্রয়োগ

দোষস্বীকার সম্পর্কিত মৌলিক আইন সাক্ষ্য আইনের ২৪ থেকে ৩০ ধারায় বর্ণিত হয়েছে। এই ধারাগুলোর সাথে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা পাঠ করলে নিম্নরূপ অবস্থা দাঁড়ায়:

(১) দোষস্বীকার পুলিশ কর্মকর্তার নিকট করা যাবে না।

(২) উহা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে করতে হবে,

(৩) দোষস্বীকার স্বেচ্ছামূলক এই মর্মে সন্তুষ্ট না হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট উহা রেকর্ড করবেন না,

(৪) তিনি উহা এই ধারায় বর্ণিত উপায়ে রেকর্ড করবেন। এবং

(৫) উক্তরূপে রেকর্ড করা হলে কেবল তখনই দোষস্বীকার সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য ও প্রাসঙ্গিক হয়।

তবে দোষস্বীকার রেকর্ড করা বা না করার ইচ্ছাধীন ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটের আছে। যদি তিনি দোষস্বীকার রেকর্ড করেন, তাহলে তাকে নিম্নোক্ত শর্তাবলী পূরণ করতে হয়-

(১) উহা ৩৬৪ ধারায় বর্ণিত উপায়ে রেকর্ডকৃত ও স্বাক্ষরিত হবে এবং অতঃপর উহা বিচারকারী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অগ্রবর্তী করতে হবে।

(২) অভিযুক্ত ব্যক্তি যে দোষস্বীকার করতে বাধ্য নয় সে সম্পর্কে তিনি সতর্ক করে দেবেন

(৩) তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশ্ন করে প্রথমে এই মর্মে সন্তুষ্ট হবেন যে, দোষস্বীকার স্বেচ্ছায় করা হচ্ছে এবং

(৪) তিনি তার কার্য সম্পর্কে দোষস্বীকারের পাদদেশে একটি স্মারকযুক্ত করবেন। দোষস্বীকার অপরাধ সম্পর্কিত অথবা অপরাধ গঠনকারী সমস্ত ঘটনা সম্পর্কিত হতে হবে। যে অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি চার্জভূক্ত হয়েছে দোষস্বীকার ঐ বিশেষ অপরাধ সম্পর্কিত হতে হবে। এই ধারানুযায়ী দোষস্বীকারমূলক বিবৃতি লিপিবদ্ধকৃত না হলে উহা সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অথবা তৎকর্তৃক যুক্ত স্মারক দাখিলের মাধ্যমে উহা মৌখিকভাবে প্রমাণ করা যাবে না।

তদন্তকালে এবং অনুসন্ধান বা বিচার শুরু হওয়ার পূর্বে দোষস্বীকার রেকর্ড করতে হবে এবং উহা দিনের বেলায় প্রকাশ্য আদালতে রেকর্ড করতে হবে। সরকারি বিধিমালায় প্রদত্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অভিযুক্তকে দিতে হবে এবং তাকে বিবৃতি দিতে বলার পূর্বে চিন্তা করার জন্য কিছু সময় দিতে হবে এবং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করতে হবে যে, সে এখন সম্পূর্ণভাবে পুলিশের প্রভাবমুক্ত। আদালত ১৬৪ ধারায় অভিযুক্তের লিপিবদ্ধকৃত বিবৃতির inculpatory অংশ গ্রহণ করে exculpatory অংশ বাদ দিতে পারবেন। আইনের সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি এই যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিবৃতি এই যে, যা দোষস্বীকার নয় কিন্তু যাতে কতিপয় প্রাসঙ্গিক ঘটনা সম্পর্কিত স্বীকারোক্তি থাকে, তা’ সাক্ষ্য আইনের ১৮ থেকে ২১ ধারানুযাযী গ্রহণযোগ্য, এই শর্তে যে, উক্ত দোষস্বীকার স্বেচ্ছায় করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির দেয়া দোষস্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি ও স্বীকারের মধ্যে পার্থক্য আছে। ১৬৪ (৩) ধারায় নির্ধারিত উপায়ে রেকর্ড করা না হলে দোষস্বীকার সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। ১৬৪ ধারানুযায়ী দোষস্বীকারমূলক বিবৃতি লিপিবদ্ধ করার জন্য অভিযুক্তকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে বিলম্ব হলে উক্ত দোষস্বীকার বাতিল হবে না, যদি উহা সেচ্ছায় করা হয়ে থাকে।

68 DLR (AD) (2016) 392-অপরাধী ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিল এবং প্রহরিরূপে কাজ করে ভিক্টিমের হত্যায় অংশগ্রহণ করেছিল, যখন তৎমতে, অন্য আসামী ব্যক্তিরা ভিক্টিমকে হত্যা করেছিল। সে কেবল প্রহরীরূপে কাজ করেনি, বরং অন্য সকল আক্রমণকারীসহ জয়ধ্বনি দিয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। অতএব, ইহা বলা যায় না যে, দোষস্বীকারোক্তি সাফাই ছিল, অথবা ভিক্টিমকে হত্যা করার সাধারণ অভিপ্রায় পিটিশনারের মামলায় অনুপস্থিত ছিল [5 LNJ (AD) 46].

66 DLR (HC) 386-কোন দোষ স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য স্বেচ্ছাকৃতভাবে এবং সত্যরূপে গ্রহণ করা হয়, তখন বিলম্বিত প্রত্যাহার করণের কোন মূল্য থাকে না।

18 BLC (HC) (2013) 453-দোষ স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি-যে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছে, তা আসামীর আক্ষরিক বিবৃতিতে নেই। আসামীর প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে তথ্যাবলী সংগ্রহ করার পর ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছিল।

13 MLR (AD) (2008) 121-Mohammad Ali alias Shanu Vs.

The State-একজন আসামীর প্রদত্ত জবানবন্দি অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।

62 DLR 399 (HC)-State Vs. Azam Reza-The accused failed to discharge his obligation. The certified copies of the statements under sections 161 and 164 of the Code of the maids and others of the house of the accused filed by the accused at the time of examination under section 342 of the Code in support of his case that the deceased committed suicide by hanging are not evidence and as such cannot be considered. There is no evidence that the deceased committed suicide by hanging. Moreover the accused’s explanation that the deceased committed suicide by hanging has been proved untrue. It is proved beyond doubt that the deceased was done to death. There is nothing to hold that anybody else besides the accused could cause the death of the deceased.

61 DLR 253-State vs Sumon Saha-ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪(৩) ধারার বিধান শুধুমাত্র পদ্ধতিগত কোনো বিষয় না, বরং এটা এতটা মৌলিক বিধান। ১৬৪ (৩) ধারার বিধান হলো বাধ্যতামূলক যা ইতোমধ্যেই প্রিভিকাউন্সিলের সিদ্ধান্ত দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এই ধারার অধীনে কোনো জবানবন্দি গ্রহণ করার পূর্বে জবানবন্দি স্বেচ্ছায় দেয়া হচ্ছে কিনা সে সম্পর্কিত প্রকৃত ও মৌলিক অনুসন্ধান করতে বাধ্য। এটা করতে গিয়ে অভিযুক্তকে জবানবন্দির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন যে, এরূপ জবানবন্দি অপরাধ সম্পর্কে অনুশোচনা থেকে ব অন্য কোনো ভাল উদ্দেশ্যে করছেন নাকি কারো শিখানো মতে বা কারো দ্বারা উৎসাহিত হয়ে নাকি কোনো ভয় বা অঙ্গিকারের কারণে এরূপ জবানবন্দি করছেন। কোনো জবানবন্দি, কিছু সত্য কিছু মিথ্যা হলেও, কখনো ঘটনার সম্পূর্ণ চিত্র অঙ্কন করে না। তারপরও এটা জবানবন্দি প্রদানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এই জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই। [Ref: AIR 1936 PC 253) 1

(RoLR 145-Masud Mahiuddin (Md) Vs. State-অভিযোগ আনা হয়েছে যে অভিযুক্ত আগাম জামিনের অপব্যবহার করেছে কারণ সে জামিনে মুক্তি হয়েছে রায় পর ভুক্তভোগীকে টেলিফোনে হুমকি প্রদান করেছে এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে। এটাই প্রমান করে যে, অভিযুক্ত আগাম জামিনের অপব্যবহার করেছে।

16 BLT (HCD) (2008) 235-The State Vs Md. Zahirul-বিচার বিভাগীয় বা বিচার বহির্ভূত যেভাবেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করা হোক না কেন, শুধুমাত্র এই জবানবন্দির উপর ভিত্তি করেই শাস্তি প্রদানে কোনো আইনে বাধা নেই, যদি বিচারক বিশ্বাস করেন যে, জবানবন্দিটি কোনো প্রকার নির্যান, ভয়ভীতি বা প্রভাব বিস্তার না করে স্বেচ্চামূলকভাবে প্রদান করা হয়েছে এবং অন্যান্য সাক্ষা জবানবন্দিকে সমর্থন করে। যদি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি অন্যান্য প্রত্যক্ষ ও পরিস্থিতিগত সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত হয় তাহলে এরূপ জবানবন্দি আইনত শান্তি প্রদানের ভিত্তি হতে পারে।

11 MLR (HCD) (2006) 76, State Vs. Mofizuddin and others মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে অপরাধ অবশ্যই আইনে সাক্ষ্য দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হতে হবে। সুনিদিষ্ট কারণ ছাড়া বর্ণিত সময়ের বেশী সময় ধরে পুলিশ হেফাজতে রাখার পর যদি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুসারে আসামী জবানবন্দি প্রদান করে তাহলে তা স্বেচ্ছাধীন হয় না। সুতরাং এক্ষেত্রে অন্যান্য সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত না হলে শুধুমাত্র জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদান করা যায় না।

11 MLR (HCD) (2006) 270, Majid Sheikh alias Majid and others Vs. The State-এটা সুপ্রতিষ্ঠিত যে, শুধুমাত্র সহ-অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে শাস্তি দেয়া যায় না, যদি তা অন্যান্য স্বতন্ত্র সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত না হয়। সর্বোচ্চ আদালত শুধুমাত্র সহ অভিযুক্তের জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদানকে কোনোভাবেই অনুমোদন দেয় না।

11 MLR (HCD) (2006) 417, State Vs. Gaush Mea @ Rana- কোনো অভিযুক্তের শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ। কোনো রকম সন্দেহের অবকাশ না রেখে নির্ভরযোগ্য ও ধারাবাহিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হতে হবে। চাক্ষুস সাক্ষীর সাক্ষ্য শাস্তি প্রদানের ভিত্তি হতে পারে। সুতরাং সহ-অভিযুক্তদের জবানবন্দি অন্যান্য সহ-অভিযুক্তের জন্য বাধ্যকারী না যদি অন্যান্য সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত না হয়।

11 BLC 498-১৪/১/১৯৯৮ সালের আদেশ এটাই নির্দেশ করে যে, তাকে আবারো ৪৮ ঘন্টার পুলিশ রিমাণ্ডে নেওয়া হয়েছিণ কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট এ সংক্রান্ত কোন উপযুক্ত আদেশ প্রদান করেননি। কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষাকালে যে স্পষ্টভাবে বলেছে যে, পুলিশ বৈদ্যুতিক শক প্রদানের মাধ্যমে তার বিবৃতি আদায় করেছে এবং সে ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না। নথি বিবেচনায় এটা প্রতীয়মান যে, পুলিশ নির্যাতনের মাধ্যমে বিবৃতি আদায় করেছে। যদি স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছামূলক না হয় তাহলে তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করা হবে। বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ এটা নির্ণয় করে ন্যায় বিচার করেনি যে, রাজিয়া দোলীর স্বীকারোক্তি সত্য ও স্বেচ্ছা প্রণোদিত।

11 MLR 417-অভিযুক্তের শাস্তি প্রদানকে নিশ্চিত করতে হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ দৃঢ ও নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত হতে পারে। যদিও স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি অন্যান্য সহ-অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বাধ্যকর নয় তবে তা সহ-অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে অন্যান্য স্বাক্ষ্যের সমর্থনে ব্যবহৃত হতে পারে এবং অন্যান্য সাক্ষ্যের সাথে মিলিতভাবে শাস্তি প্রদানের ভিত্তি হতে পারে।

11 MLR 76-মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে আনীত অভিযোগ অবশ্যই আইনগত সাক্ষ্য দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হতে হবে। যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের বাহিরে অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে রাখার পর যদি সে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুসারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে, তাহলে উক্ত স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছামূলকভাবে প্রদত্ত বলে ধরা যায় না এবং অন্য কোন স্বতন্ত্র সাক্ষ্য ছাড়া শুধু স্বীকারোক্তি শাস্তি প্রদানের ভিত্তি হতে পারে না।

11 MLR 270-কোন একজন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি অন্যান্যসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তা অন্যান্য স্বতন্ত্র সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত হবে। আইনে এটা প্রতিষ্ঠিত যে শুধুমাত্র স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে সহ অভিযুক্তদের শাস্তি প্রদান করা যায় না। সর্বোচ্চ আদালত শুধুমাত্র স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে সহ-অভিযুক্তদের শাস্তি প্রদান দৃঢ়ভাবে অসমর্থন করেন।

13 BLT (HC) 136-কোন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি একই অভিযোগের অন্যান্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বীকাররোক্তি প্রদান করেনি এমন অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তির ভিত্তি হিসাবে অন্য কোন অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিকে ব্যবহার করা হলে তা অবশ্যই অন্যান্য সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত হতে হবে।

13 BLT 151-স্বীকারোক্তি হল প্রত্যক্ষ সাক্ষী। শাস্তি দেওয়ার জন্য স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করা যায় এবং অন্য কোন সাক্ষ্যের সমর্থন প্রয়োজন নাই, যদি তা স্বীকারোক্তি প্রদানকারী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। তবে শর্ত হল, উক্ত স্বীকারোত্তি স্বেচ্ছামূলক এবং প্রভাবমুক্ত হতে হবে। স্বেচ্ছামূলক বলতে বোঝায় যা কোন ব্যক্তির বিবেকের তাড়নায় সত্য বলার স্পৃহা থেকে নিজের ইচ্ছায় করে থাকে। যদি আদালত মনে করেন যে, স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছামূলক এবং প্রভাবমুক্ত, তাহলে উহার উপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদানে আদালতের কোন বাধা নেই।

13 BLT 424-স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামীকে শাস্তি প্রদান করা যায়, কিন্তু অন্যান্য সহ-আসামীদের এই স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে শাস্তি দেওয়া যায় না, যদি তা অন্যান্য সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত না হয়

26 BCR (HC) 275-স্বীকারোক্তিকে স্বেচ্ছামূলক বলা যাবে না যদি তা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার ও অবৈধ ডিটেনশনের কমপক্ষে তিন দিন প্রদান করা না হয়।

25 BCR (HC) 52-স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করে শুধুমাত্র স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামীকে দণ্ড দেওয়া যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে অন্য কোন সাক্ষ্যের সমর্থন প্রয়োজন নাই। যদি স্বীকারোক্তিটি স্বেচ্ছামূলক এবং প্রভাবমুক্ত হয়। অন্যান্য সহ-আসামীদের দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি একটা ভিত্তি হতে পারে, তবে অন্যান্যা সাক্ষ্যের সমর্থন প্রয়োজন।

26 BLD (HC) 381-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩০ ধারা অনুসারে অভিযোগে, আঁখি বেগমকে জড়িত করা যাবে না যদি এটা দৃষ্ট না হয় যে, সে প্রধান আসামীকে উক্ত কাজ করার জন্য কোনভাবে উৎসাহিত করেছিল। আলোচ্য মামলায়, প্রসিকিউশনের কোন সাক্ষী এটা ইঙ্গিত করেনি যে, আখি বেগম প্রধান আসামীকে দর্ষণ বা দর্ষণের উদ্যোগে সহায়তা করেছে বা উৎসাহিত করেছে।

56 DLR (HC) 383-আসামীর অনুপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য তার বিরুদ্ধে মৌলিক সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে না। এরূপ বক্তব্য শুধু অন্যান্য সাক্ষ্যের সমর্থক হিসাবে বা সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ও ১৫৭ ধারা অনুসারে আদালতে প্রদত্ত সাক্ষ্যের সহিত বিরোধের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।

57 DLR 289-সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ধারার বিধান সাপেক্ষে একজন সাক্ষীর ১৬৪ ধারা অনুসারে প্রদত্ত জবানবন্দি শুদুমাত্র জেরার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।

23 BLD 255 (HC)-একজন সহ অসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী অন্য সহআসামীর সমর্থিত স্বীকারউক্তি হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না। যদিও উভয়ে দাগী সাক্ষ্যের মত স্বীকার উক্তি প্রত্যাহার করে। বিজ্ঞ অতিঃ দায়রা জজ একমাত্র সহআসামীর স্বীকারউক্তিমূলক জবানবন্দীকে বিশ্বাস করিয়া আপীলকারী আসামীকে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় শাস্তি প্রদান করিয়া ন্যায়বিচার ব্যহত করেছেন।

২৯৫ 23 BLD 621 (HC)-অত্র বিধির ১৬৪ ধারার বিধান হচ্ছে স্বাক্ষী কিংবা আসামীর জবানবন্দী রেকর্ড করা। স্বীকারোক্তি হচ্ছে সুস্পষ্টভাবে আসামীর জবানবন্দী।

প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি ও বিচার-বহির্ভূত স্বীকারোক্তি : গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে প্রত্যাহৃত ও অপ্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয় স্বীকারোক্তি আইনে সমভাবে গ্রহণযোগ্য (32 CWN 1004)। সাধারণতঃ প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি সত্য ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হলে উহার ভিত্তিতে দন্ডাদেশ দেয়া যাবে; তবে রীতি বিচক্ষণতার খাতিরে নিরপেক্ষভাবে সমর্থিত না হলে উহার উপর নির্ভর করা নিরাপদ নয় (26 CWN 1016)। বিচার বহির্ভূত স্বীকারোক্তি একপ্রকার দুর্বল স্বীকারোক্তি (AIR 1975 SC 258)। মৃতের অলংকারাদি সরানো সম্পর্কে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের দ্বারা মিথ্যা গল্পের অবতারণা করা এবং অভিযুক্তের নিকট থেকে উক্ত অলংকারাদি উদ্ধার করা সম্পর্কিত বিষয়টি বিচার বহির্ভূত স্বীকারোক্তি সম্পর্কে সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রভাবিত করে (AIR 1974 SC 1545)। স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কার্য করার পূর্বে আদালত বিবেচনা করবেন- (১) কোন্ পরিস্থিতিতে স্বীকারোক্তি করা হয়েছে, (২) কোন উপায়ে এটা করা হয়েছে, (৩) সতর্কতার সাথে অর্থাৎ প্রথমত স্বীকারোক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য কিনা এবং দ্বিতীয়ত উহাতে সমর্থন আছে কিনা; এটা কার কাছে করা হয়েছে (1972 Cr.LJ 566 SC)। স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার পরে অভিযুক্তকে পুলিশ কাস্টডিতে না পাঠিয়ে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে পাঠাতে হবে (Ref: 13 DLR 5) |

রাজসাক্ষী:

রাজসাক্ষী একবার ক্ষমাভিক্ষা গ্রহণ করলে তিনি অন্য কোন সাক্ষীর মত একই অবস্থানে অবস্থান করেন, ব্যতিক্রম এই যে, যে শর্তে তাকে ক্ষমাভিক্ষা বাজেয়াপ্ত হতে বাধ্য। তাকে অন্যান্য সঙ্গীদের মত পরীক্ষা করা যাবে। রাজসাক্ষী দ্বারা প্রদত্ত স্বীকারোক্তি মৌলিক সাক্ষ্য নয়, তবে উহা আদালতে তার সাক্ষ্যকে সমর্থন বা পরস্পর বিরোধী করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে (38 Cr.LJ 852) |

33 DLR 320-সাক্ষ্য আইনের ৮০ ধারা কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় উপযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারা লিপিবদ্ধকৃত বিবৃতি প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা ত্যাগ করে কারণ, অনুমান করা হয় যে, উক্ত বিবৃতি ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই বিবৃতি কেবলমাত্র সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ও ১৫৫ ধারায় তার বক্তব্যকে পরস্পর বিরোধী করতে অথবা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৭ ধারায় সমর্থন করতে ব্যবহার করা যায়, তবে রাজসাক্ষীর সাক্ষ্য অন্যান্য প্রমাণাদি দ্বারা সমর্থিত হতে হবে এবং উহা ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত তার পূর্বের স্বীকারোক্তি দ্বারা সমর্থিত হবে না। একজন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় দেয়া তার বিবৃতি সমর্থন না করলে তার সাক্ষ্যকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করতে হবে।

 

সাক্ষীর বিবৃতি :

(১) উপ-ধারায় “বিবৃতি” শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এবং একজন সাক্ষীর এমনকি একজন মৃত ব্যক্তির বিবৃতিও অন্তর্ভূক্ত করে। বিবৃতি অভিযুক্তের অন্তরালে লিপিবদ্ধ করা হলে উহা তার বিরুদ্ধে মৌলিক সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে না (28 Cr.LJ 274, AIR 1944 Sind, 38)। উত্ত বিবৃতি সাক্ষীদের জেরা করার এবং বিচারে তাদের সাক্ষ্য মিথ্যা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত কর্তৃক ব্যবহৃত হতে পারে (53 Cr.LJ 79)। কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দেয়া বিবৃতি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য এবং সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ও ১৫৭ ধারানুযায়ী আদালতে দেয়া বিবৃতি সমর্থন বা পরস্পর বিরোধী করতে ব্যবহার করা যাবে (AIR 1942 Cal 36)। আদালতের বাইরে সাক্ষী যা বলেছে তা সত্য এমন নয় (AIR 1946 PC 38)। এই ধারায় দেয়া সাক্ষীর বিবৃতি স্বেচ্ছায় দেয়া হয়নি মর্মে সর্বদা সন্দেহের উদ্রেক করে। ১৬৪ ধারার বিবৃতি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদৌ সাক্ষ্য নয় এবং এর একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে আদালতে সাক্ষীদের দেয়া সাক্ষ্য নাকচ করা (AIR 1941 Cal. 406)। এরূপ পরিস্থিতি লিপিবদ্ধ করার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে সাক্ষীর উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করা (32 Cr.LJ 48)। যে সাক্ষীদের জেরা করা হবে ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ বিবৃতি তারাই দিয়েছিলেন, তা প্রমাণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করার প্রয়োজন নেই। এইরূপ বিবৃতি সাক্ষ্য আইনের ৮০ ধারায় বস্তুনিষ্ঠ বলে অনুমিত (39 Cr.LJ 864)। 9 BLD 187-সাক্ষীদের দেয়া বিবৃতি কোনক্রমেই ঘটনার সত্যতার মৌলিক সাক্ষ্য নয়। আদালতে দেয়া সাক্ষ্য মিথ্যা এটা প্রমাণের জন্য সাক্ষীর জেরায় উত্ত বিবৃতি ব্যবহৃত হবে; লিপিবদ্ধকৃত বিবৃতি সত্য এটা প্রমাণের জন্য নয়। শূন্যতা পূরণের জন্য বা প্রসিকিউশনের দুর্বল সাক্ষ্যকে সবল করার জন্য প্রদত্ত বিবৃতি ব্যবহার করা যাবে না (Ref: 1 BLD 433)।

স্বেচ্ছা প্রণোদিত সম্পর্কিত অনুমান:

ধারা ১৬৪ তে যথাযথভাবে লিপিবদ্ধকৃত স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে অনুমান করা হয় যে, উহা স্বাধীনভাবে করা হয়েছে। কোন আদালত লিপিবদ্ধকারী ম্যাজিস্ট্রেটের তাৎক্ষণিক মতামত অন্ধভাবে গ্রহণ করতে পারে না (32 Cr.LJ 97)। স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি স্বেচ্ছায় দেয়া হয়েছে কিনা তা অবশ্যই একটি ঘটনাগত প্রশ্ন। স্বেচ্ছায় দেয়া বিবৃতির প্রকৃতি নির্ণয়ে বিভিন্ন ঘটনায় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা প্রয়োগ করতে হবে। কোন পরীক্ষা উপযুক্ত তা বিচারকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে।

48 DLR 305-স্বীকারোক্তি একবার সত্য ও স্বেচ্ছা প্রণোদিত বলে প্রমাণিত হলে উহা বিলম্বে প্রত্যাহার করার বিষয়টি অভিযুক্তের জন্য সহায়ক নয়। এইরূপ ক্ষেত্রে কোন প্রকার সমর্থনের প্রয়োজনীয়তাও আইনে বর্ণিত নয় তবে বিচক্ষণতার নিয়ম (Rule of Prudence) অনুযায়ী সাধারণত সমর্থন আশা করা হয়।

48 DLR 149-প্রতিষ্ঠিত নীতি যে, স্বীকারোক্তির একাংশ গ্রহণযোগ্য নয় অন্য অংশ বাদ দিয়ে। স্বীকারোক্তি খন্ড খণ্ড করা এবং প্রসিকিউশনের জন্য সহায়ক অংশটুকু ব্যবহার করা আইন বহির্ভূত।

48 DLR 517-১৬৪ ধারার শর্তাবলী পূরণ না করা জর্নিত ত্রুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতে জেরা করে সংশোধন করা যাবে না। 48 DLR 588-স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করার পূর্বে প্রমাণিত হতে হবে যে,

উহা কেবলমাত্র স্বেচ্ছা প্রণোদিত নয়, সত্যও বটে। সেচ্ছা প্রণোদিত ও সত্যতা একত্রে স্বীকারোক্তিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে।

49 DLR 66-প্রশ্ন উত্তরের বর্ণনা ছাড়াই এবং ১৬৪ ধারার বিধানাবলী পালন না করেই সাদামাটা কাগজে কৃত স্বীকারোক্তি অগ্রহণযোগ্য। স্বীকারোক্তি দেয়ার পূর্বে অভিযুক্তকে ৩ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছিল এবং ফরোয়ার্ডিং রিপোর্টে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল; স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় করা হয়নি (Ref: 16 BLD(HCD) 350)

49 DLR 66-Rule of Prudence অনুযায়ী প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি সমর্থিত হওয়া প্রয়োজন। কারণ উহা সন্দেহ মুক্ত নয় আর তাই উহার উপর নির্ভর করা সমীচিন নয়। 49 DLR 573-আদালত যদি বিশ্বাস করে যে, স্বীকারোক্তি, বিচার বিভাগীয় বা বিচার বহির্ভূত, প্রত্যাহৃত বা অপ্রত্যাহৃত যাই হোক না কেন, স্বেচ্ছা প্রণোদিত ও নির্যাতন বা বল প্রয়োগে পাওয়া যায়নি, তাহলে উক্ত স্বীকারোক্তি অভিযুক্তর দন্ডাদেশের একমাত্র ভিত্তি হতে পারে।

50 DLR 17-অভিযুক্তকে যখন ২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখা হয় তখন স্বীকারোক্তি রেকর্ড করা ম্যাজিস্ট্রেটের কর্তব্য হচ্ছে থানায় তাদের সাথে কেমন আচরণ করা হয়েছিল, তারা কেন স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন এবং তারা স্বীকারোক্তি করুক বা না করুক তাদেরকে আর পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হবে না ইত্যাদি তাদেরকে বলা।

উপরন্তু নথিদৃষ্টে মনে হয় যে, ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তদেরকে অবহিত করেন নি যে, তিনি একজন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কর্মকর্তা নয়। পরীক্ষান্তে দেখা যায় যে, স্বীকারোক্তি দেয়ার পরে ম্যাজিস্ট্রেট; তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন। তাই আমরা দেখি যে, স্বীকারোক্তি দেয়ার পূর্বে অভিযুক্তদের মন থেকে সম্পূর্ণভাবে পুলিশের প্রভাব, প্ররোচনা বা ভয় দূর করতে ম্যাজিস্ট্রেটের আইনগত কর্তব্য সম্পর্কে তাঁর কোন ধারণা নেই। তাই অভিযুক্ত কর্তৃক প্রদত্ত স্বীকারোক্তি নিজের কিংবা সহ-অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য বলে বিবেচিত হবে না। (Ref: 4 MLR 369 (HC)।

51 DLR 57-অন্য কোন সাক্ষ্য দ্বারা অসমর্থিত exculpatory বিবৃতি দন্ডাদেশ আরোপের ভিত্তি হতে পারে না। 51 DLR 244-প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি পরিত্যাগ করতে হবে এমন কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই বরং উহা স্বেচ্ছায় দেয়া হলে দন্ডাদেশের ভিত্তি হতে পারে। 51 DLR 488-অভিযুক্ত দোষস্বীকার না করলেও তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে না-অভিযুক্তকে এই মর্মে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জানানোর কোন আইনগত প্রয়োজনীয়তা নেই।

বিজ্ঞ আইনজীবির মতে, অভিযুক্ত গণ দোষস্বীকার না করলেও তাদেরকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হবে না মর্মে স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধকারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়নি। ফলে শারীরিক নির্যাতনের ভয়ে তারা দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে কিন্তু এই যুক্তি বর্তমান মামলায় কোন ফল বহন করে না।

50 DLR 337-অভিযোগ গঠন করতে বা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন এই মর্মে অভিযুক্তের দাখিলকৃত দরখাস্ত বিবেচনা করে বিচারিক আদালত ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত কোন সাক্ষীর বিবৃতি বিবেচনা করতে বাধ্য নয়।

50 DLR 121-সত্য হিসেবে প্রমাণিত স্বীকারোক্তির একটি অংশ সত্য নয় বলে অপর অংশ প্রত্যাখ্যান করে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে উক্ত সত্য অংশ আদালত কর্তৃক গৃহীত হতে পারে। স্বীকারোক্তির একাংশ যদি প্রত্যাখান করা হয়, তাহলে অপর অংশ সত্য হলেও গ্রহণ করা যাবে না, এই যুক্তি তর্কের কোন মেরিট নেই।

বিজ্ঞদায়রা জজ স্বীকারোক্তির একটি অংশ প্রত্যাখ্যান করেন যখন তিনি উহা রেকর্ডভুক্ত অন্যান্য সাক্ষ্যের পরিপন্থি দেখতে পান। তবে তিনি উহা কেবলমাত্র সন্দেহ ও অনুমান করে প্রত্যাখ্যান করেনি। স্বীকারোক্তির একটি অংশ অভিযুক্তের অনুকূলে হলে উহার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে যদি উহা রেকর্ডভুক্ত অন্য সাক্ষ্যের পরিপন্থি হওয়ায় সত্য না হয়।

51 DLR 57-অভিযুক্তকে কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা কালে যেহেতু স্বীকারোক্তির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়নি তাই তার স্বার্থহানী ঘটেছে। এই ত্রুটি ৫৩৭ ধারায় সংশোধন যোগ্য নয়।

51 DLR 466-ম্যাজিস্ট্রেটকে সাক্ষী হিসেবে তলব না করে স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করা বিবেচনা প্রসূত নয়। ১৬৪ ও ৩৬৪ ধারার ফরম শুধু পালনই করা হয়নি বরং আইনের সারবস্তু সমভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা আদালতকে তা দেখতে হয়।

51 DLR 43-ফুলস্কাক কাগজে বিবৃতি লিপিবদ্ধকরণ ও উহা পৃষ্ঠাংকন (endorsement) না করা মারাত্মক ত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। আইনের কোন বিধি ভঙ্গন, যদি করা হয়ে থাকে, তা, কেবল প্রায়োগিক এবং তদ্বারা স্বীকারোক্তির সাক্ষ্যগত মূল্য উড়িয়ে দেয়া যাবে না। কারণ ত্রুটিটি ৫৩৩ ধারায় সংশোধনযোগ্য।

49 DLR 336-অভিযুক্তদেরকে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশ্ন করা হয়েছিল কিনা ও তাদের নিজেদের ভাষায় সেগুলো তাদের কাছে বোধগম্য করা হয়েছিল কিনা তা প্রতীয়মান হয় না এবং চিন্তা করার জন্যও তাদের সময় দেয়া হয়নি; তাই তাদের স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত বা সত্য বলা যাবে না।

51 DLR 544-বিশেষ সীটে কেবল LTI না থাকা (যদিও একটিতে ছাড়া প্রত্যেক সীটে LTI পাওয়া যায়) এবং স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার পূর্বে উহার পরিনতি সম্পর্কে অভিযুক্তকে অবহিত না করার কারণে প্রদর্শনী ৪ হিসেবে উক্ত স্বীকারোক্তি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় (Ref: 4 MLR (HC) 225)।

55 DLR 137 (HC)-ফৌঃ কাঃ বিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দী প্রদানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাইতে পারে যদি দেখা যায় যে, ইহা সত্য, সেচ্ছাপ্রণোদিত এবং নিজে জড়িত প্রকৃতির। ফৌঃ কাঃ বিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দী সহ আসামীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না, যদি না মামলার অবস্থা এবং কোন স্বাক্ষী সমর্থন করে।

55 DLR 273 (HC)-ফৌঃ কাঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ডের দরখাস্তের সঙ্গে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন থাকায় এবং স্বীকার উক্তি করুক কিংবা না করুক পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হইবে না মর্মে আসামীকে কোন প্রশ্ন না করায় আসামীর মনে ভয় এবং আসংখা সম্পর্কে অনুমান করার যুক্তি সংগত সুযোগ না দেওয়ায় এবং পুলিশ হেফাজতে ফিরে গেলে তাদের কি পরিণতি হইবে ভেবে দেওয়া স্বীকারোক্তি সত্য ও সেচ্ছাপ্রণোদিত প্রকৃতি কে বাধাগ্রস্ত করে।

16 BLD 120 (HCD)-যেক্ষেত্রে পুলিশের দ্বারা গ্রেফতার করার ৩ দিন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করা হয় এবং পরে সময় পর্যন্ত তাকে কোথায় রাখা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট তা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হন এবং প্রসিকিউশন তার কোন ব্যাখ্যা দেয় না, সেক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি সন্দেহপূর্ণ হয়।

16 BLD 552 (HCD)-যেক্ষেত্রে অভিযুক্ত তার স্বীকারোক্তির জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করার অব্যবহিত ২ দিন পূর্বে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়, সেক্ষেত্রে তার স্বীকারোক্তি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে নিতে হবে। 16 BLD 3 (HCD)-স্বীকারোক্তি গ্রহণ করার ও উহার উপর নির্ভর করার পূর্বে এটা কেবল স্বেচ্ছা প্রণোদিতই নয় বরং সত্য বলেও প্রমাণিত হতে হবে।

17 BLD 15 (HCD)-স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার অব্যবহিত পূর্বে পুলিশি হেফাজতে দীর্ঘক্ষণ থাকার বিষয়টি অন্য কোনভাবে ব্যাখ্যা করা না হলে উত্ত স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয়।

কারে BLD 352 (HCD)-স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার জন্য নির্ধারিত ফরমের ৩, ৪, ও ৮ নং কলাম ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পূরণ করা হয়নি। তাই এই স্বীকারোক্তি যথেষ্ট সন্দেহজনক হওয়ায় আদালত কর্তৃক বিবেচনাযোগ্য নয়।

17 BLD 613 (HCD)-স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার পূর্বে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে এই বলে আশ্বস্ত করেনি যে, স্বীকারোক্তি দেয়ার পরে তাকে আর পুলিশ হেফাজতে দেয়া হবে না। জুডিশিয়াল হেফাজতে দেয়ার পরিবর্তে সত্যই অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে দেয়া হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক গৃহীত পদ্ধতি বিচারিক বিশ্লেষণে গ্রহণযোগ্য নয়। এই স্বীকারোক্তি অভিযুক্তের মনে ভয় থাকারই ফলস্বরূপ হওয়ায় উহার উপর নির্ভর করা যাবে না।

17 BLD 15 (HC)-কোন নিরপেক্ষ সমর্থনমূলক সাক্ষ্যের অবর্তমানেসহ অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি দৃশ্যতঃ অন্যান্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়।

18 BLD 309 (HC)-১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত সাক্ষীর বিবৃতি মৌলিক সাক্ষ্য না হওয়ায় উহা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। তবে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৩) ধারায় অনুমতিযোগ্য হওয়ায় প্রসিকিউশন পক্ষ তার নিজের সাক্ষীর বক্তব্যকে নাকচ করার অধিকারী। [Ref: 3 MLR 215 (HC)।

18 BLD 655 (HC)-স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার পূর্বে অভিযুক্তের দীর্ঘদিন পুলিশি হেফাজতে থাকার ক্ষেত্রে আশ্বস্থতা বা সতর্কতা প্রয়োজন, যা না থাকলে স্বীকারোক্তি অসত্য ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয় এবং উহা অভিযুক্ত আপীলকারী অথবা সহ অভিযুক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না [Ref: 4 BLC 43] |

19 BLD 268 (HC)-অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধকরণে ১৬৪ ও ৩৬৪ ধারার শর্তাবলী পূরণ করা হয়নি। দেখা যায় যে, পুলিশি রিমান্ড থেকে আসার পরে অভিযুক্ত স্বীকারোক্তি দিয়েছে যা কোনভাবেই এই সন্দেহ মুক্ত না যে, উক্ত স্বীকারোক্তি হুমকি, বল প্রয়োগ ও দৈহিক নির্যাতনের ফলস্বরূপ নয়। উপরন্তু উহা সমর্থনের জন্য কোন নিরপেক্ষ সাক্ষ্য নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক ঘটনার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত না থাকার কারণে উক্ত স্বীকারোক্তি exculpatory মর্মে প্রতীয়মান হয়, আর তাই উহা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না এবং উহার উপর ভিত্তি করে দেয়া দন্ডাদেশ বহাল যোগ্য নয়।

19 BLD 74 (HC)-স্বীকারোক্তি সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হওয়া এবং উহা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার পূর্বে ১৬৪ (৩) ধারার বিধানাবলী অবশ্যই পালন করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট লিপিবদ্ধকৃত স্বীকারোক্তির স্বেচ্ছা প্রণোদিতা নির্ণয় করতে অনুসন্ধান করতে বাধ্য।

3 BLT 159 (HC)-“তিনি ডাকাত দলের সাথে ছিলেন”, কোন ব্যক্তির এইরূপ বিবৃতি ডাকাতি সংঘটনের স্বীকারোক্তি নয়।

1 MLR 62 (HC)-অপরাধ সংঘটনের সহিত অসম্পর্কিত exculpatrory বিবৃতি স্বীকারোক্তি মূলক বিবৃতি না হওয়ায় উহা স্বীকারোক্তিকারীর বিরুদ্ধে অথবা যৌথভাবে বিচার করা সহ-অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। কারণ উক্ত বিবৃতি সাক্ষ্য আইনের ৩০ ধারা মতে কোন সাক্ষ্য নয়।

1 MLR 81 (HC)-ফৌজদারী কার্যধারা কেবলমাত্র আদালতের গৃহীত কার্যধারা অন্তর্ভুক্ত করে না বরং এজাহার পাওয়ার পরে, যে কার্যধারায় পুলিশ ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধকৃত সাক্ষীর বিবৃতি পায়, উক্ত কার্যধারাও অন্তর্ভুক্ত করে।

3 MLR 57 (HC)-আংশিক সত্য বলে প্রমাণিত স্বীকারোক্তি গ্রহণ করা যাবে এবং অপর অংশটি প্রত্যাখ্যান করা যাবে। যৌক্তিক বলে প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে স্বীকারোক্তির সত্য অংশটুকুর উপর ভিত্তি করেও দোষী সাব্যস্ত করা যাবে। স্বীকারোক্তির উভয় অংশটি যথাযথভাবে আদালতকে মূল্যায়ন করতে হয়।

3 MLR 292 (HC)-প্রকৃতিগতভাবে সত্য স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ও inculpatory না হলে নিরপেক্ষ সমর্থন ছাড়া স্বীকারোক্তি দন্ডাদেশের ভিত্তি হবে না। ৩৪২ ধারায় অভিযুক্তকে পরীক্ষা করা কালে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার নিকট exculpatory বিবৃতি রাখা না হলে উহা ন্যায় বিচার বিঘ্নিত করে বিচার কার্য বাতিল করে যা ৫৩৭ ধারায় সংশোধনযোগ্য নয়।

2 MLR 60 (HC)-১৬৪ ধারায় অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করা কালে ম্যাজিস্ট্রেটকে ৩৬৪ ধারার শর্তাবলী পালন করতে হবে; পালন না করা হলে উক্ত স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। অনুরূপভাবে বিচারকার্যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে তদন্তকারী কর্মকর্তা আনতে না পারলে উহা প্রসিকিউশনের মামলায় সন্দেহের সৃষ্টি করে যার ফলে খুনের মত নারকীয় অপরাধে অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়ে যায়।

2 MIR 373 (HC)-স্বেচ্ছা প্রণোদিত নয় এবং শপথ পূর্বক বা প্রশ্ন না করে লিপিবদ্ধকৃত স্বীকারোক্তি বেআইনী হওয়ায় উহা দন্ডাদেশের ভিত্তি হতে পারে না।

3 MIR 27 (AD)-প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি সর্বদা প্রত্যাখান করতে হবে এমন কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করা হলেও সত্য ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত বলে প্রমাণিত হলে এবং ৩৬৪ ধারানুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হলে এবং লিপিবদ্ধকারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক উক্তরূপে সঠিক বলে প্রতীয়মান হলে উহার উপর নির্ভর করে দন্ডাদেশ আরোপ করা যাবে।

3 MIR 30 (AD)-যেক্ষেত্রে পুলিশের হেফাজত থেকে হাজির করা অভিযুক্তে স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার সময়ে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কর্তৃক নির্যাতনের ভয় দূর করতে ব্যর্থ হয় এবং স্বীকারোক্তি দেয়ার পরে অভিযুক্তকে আবার পুলিশ হেফাজতে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে উক্ত স্বীকারোক্তি অভিযুক্তের কিংবা সহ-অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দন্ডাদেশ দেওয়ার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

52 DLR 566 (HC)-স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার পরে অভিযুক্তকে রিমান্ডে দেয়া আইনের পরিপন্থি আর তাই প্রসিকিউশন পক্ষ ঐ স্বীকারোক্তি থেকে কোন সুবিধা পায় না।

20 BLD 422 (HCD)-১৭৩ ধারায় পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করার পূর্বে অভিযুক্ত ১৬৪ ধারায় দেয়ার বিবৃতির অনুলিপি পাওয়ার অধিকারী নয়। এইরূপ অধিকার দেয়া হলে তা তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।

20 BLD 45 (HCD)-৬, ৮ ও ৯ নং ফরমের শর্ত পূরণ না করা এবং নিজের হাতে সার্টিফিকেট দেয়া প্রদত্ত স্বীকারোক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। কারণ এর অর্থ, বড় জোর কিছু সার্কুলার লঙ্ঘন করা বা পালন না করা।

৬নং কলামের গঠন থেকে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত কয়েদীকে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা হলে তিনি উহার হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন। ৯নং কলামের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এই কলামটি প্রযোজ্য নয়। কারণ ম্যাজিস্ট্রেট দেখেন যে, উক্ত কয়েদীর দেয়া বিবৃতি স্বেচ্ছা প্রণোদিত ছিল।

20 BLD 45 (HCD)-স্বীকারোক্তি আংশিক সত্য বা আংশিক মিথ্যা হলেও অর্থাৎ উহা পূর্ণ ছবি তুলে না ধরলেও উহা স্বীকারোক্তিদানকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে এবং স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দন্ডাদেশ বহাল রাখার কোন আইনগত বাধা নেই।

8 BLT (AD) 23-কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ বিবৃতি মৌলিক সাক্ষ না হলেও উক্ত বিবৃতি সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ও ১৫৫ ধারায় বিবৃতিদাতার বক্তব্যকে পরষ্পর বিরোধ করতে অথবা ১৫৭ ধারায় সমর্থন করতে ব্যবহার করা যাবে।

8 BLT 87 (AD)-হাইকোর্ট বিভাগ স্বীকারোক্তি (প্রদর্শনী ৮) বিবেচনা পূর্বক দেখেন যে, অভিযুক্তকে লিপিবদ্ধকারী কর্মকর্তার নিকট ২৮.১০.৮৬ তারিখে হাজির করা হয়েছে এবং অভিযুক্তের মতে তাকে ২৬.১০.৮৬ তারিখ বেলা ১১টায় গ্রেফতার করে কোর্ট হাজত থেকে লিপিবদ্ধকারী কর্মকর্তার নিকট আনা হয় ২৮.১০.৮৬ তারিখে। এর থেকে হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মনে হয় যে, অভিযুক্তকে কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই ২ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের রায় থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত বিভাগ মামলাটির ভালোমন্দ উভয় দিক বিবেচনা করেছেন এবং লিপিবদ্ধকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি এবং উপমহাদেশের উচ্চতর আদালতের কতিপয় সিদ্ধান্ত বিবেচনা পূর্বক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, উক্ত স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় দেয়া হয়নি। বিজ্ঞ ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জোরালোভাবে এটা একটা খুনের মামলা বলে যুক্তি দিলেও তিনি হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের কোন অনিয়ম উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

8 BLT 7 (HCD)-পিডব্লিউ ২৯. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, যিনি ডাক্তার এম.এ মান্নান, সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর লিখিত রিকুইজিশন পেয়ে রাত ৯.৩০ মিনিটে অভিযুক্ত আবদুল আলীর মৃত্যুকালীন জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করেন। ম্যাজিষ্ট্রেটের সাক্ষ্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, অভিযুক্ত আবদুল আলীর জখম খুব মারাত্মক থাকায় তিনি অন্য ম্যাজিস্ট্রেট বনাম টিএনও কর্তৃক স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার আগের দিন মৃত্যুকালীন জবানবন্দী করেছেন। এটা রহস্যময় যে মৃত্যুকালীন জবানবন্দী লিপিবদ্ধকরণের জন্য রাত ৯.৩৫ মিনিট পর্যন্ত তিনি থাকলেও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কোন অব্যাহতিমূলক সার্টিফিকেট দেয়া হয়নি এবং তাকে থানায় আনার পরের দিন আদালতে যেয়ে আনা হয়েছিল এবং কোন অবস্থায় আনা হয়েছিল সে সম্পর্কে নথিতে কিছু নেই। এর থেকে মামলাটিতে তদন্তকারী সংস্থার ঔদ্ধত্য ফুটে উঠে। আমাদের মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী (প্রদর্শনী-১০) অভিযুক্তের নিকট থেকে শারীরিক নির্যাতন, হুমকি ও ভয় দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে।

5 MLR 133 (HCD)-অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি incalputory না হলে কেবল excalputory স্বীকারোক্তি দন্ডাদেশ আরোপের ভিত্তি হতে পারে না। মৃত্যুদন্ডের অভিযোগের মত মামলায় নথিভূক্ত নির্ভরযোগ্য ও সামঞ্জস্য সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে দন্ডাদেশ দিতে হবে। বর্তমান মামলায় এইরূপ কোন সাক্ষ্য না থাকায় আরোপিত দন্ডাদেশ বহালযোগ্য নয়।

5 MLR 113 (HCD)-১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত বিবৃতি মৌলিক সাক্ষ্য না হওয়ায় উহা প্রসিকিউশন পক্ষ সমর্থনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন না। ডিফেন্স পক্ষ সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ধারায় দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরস্পর বিরোধী করার জন্য উহা ব্যবহার করতে পারেন। আইন নৈতিক দন্ডাদেশ সমর্থন করে না। দন্ডাদেশ বৈধ সাক্ষ্য ভিত্তিক হতে হবে।

8 BLT 150 (HCD)-স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় দেয়া হয়েছে কিনা- স্বীকারোক্তি পঠনপূর্বক দেখা যায় যে, স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করার পরে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এই মর্মে সার্টিফিকেট দিয়েছেন যে, “আমি বিশ্বাস করি যে স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় করা হয়েছে। স্বীকারোক্তি আমার উপস্থিতিতে করা হয়েছে এবং স্বীকারোক্তি দানকারী ব্যক্তিকে উহা পড়ে শুনালে তিনি সঠিক বলে স্বীকার করেন….” আমরা পুত্ত ক্ষানুপুঙ্খভাবে স্বীকারোক্তি ও আপীলকারীর প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি এবং পিডব্লিউ- ১২ মোহাম্মাদ আবুল হাসেম, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট, এর সাক্ষ্য পাঠ করেছি।

৩০৪ এ তিনি বলেছেন যে, স্বীকারোক্তিতে এই মর্মে একটি নোট আছে যে, অভিযুক্ত শহিদুল ইসলামকে ৮.১.৯২ তারিখ বেলা ৩টার সময় পুলিশ গ্রেফতার করে। শহিদুল ১.৯২ তারিখ বেলা ২টার সময় তার সামনে হাজির করে। নথি থেকে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত সহিদুল ইসলাম ১৮.৩.৯২ তারিখে জেল থেকে একটি দেখাস্ত ফাইল করেছেন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটকে এই মর্মে সম্বোধন করে যে, তার স্বীকারোক্তি নির্যাতন করে আদায় করায় তিনি উহা প্রত্যাহার করতে চান। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত দরখাস্ত পাওয়ার পরে একটি আদেশ দেন, যাতে বলা হয় যে, মামলার নথি ইতোমধ্যে বিচারের জন্য বিজ্ঞ দায়রা জজের নিকট পাঠানো হয়েছে। উপরোক্ত ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, স্বীকারোক্তি দেয়ার ২ মাসেরও বেশি সময় পরে উহা প্রত্যাহারের দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। স্বীকারোক্তি নির্যাতানের মাধ্যমে আদায় করা হলে উহা প্রত্যাহারের জন্য এত দীর্ঘ সময় নেয়া অভিযুক্তের পক্ষে কোন যুক্তিসঙ্গত নয়। আপীলকারীর শরীরে পিডব্লিউ-১, মোল্লা নুরুল ইসলাম কর্তৃক দৃষ্ট জখম সাধারণ মানের। তাই আমরা একমত যে, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী স্বেচ্ছা প্রণোদিত ও সঠিক।

5 MLR 309 (HCD)-বিবৃতি ও স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতির সাক্ষ্য গত মূল্য- ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ সাক্ষীর বিবৃতি মৌলিক সাক্ষ্য না হওয়ায় উহার ভিত্তিতে দন্ডাদেশ আরোপ করা যাবে না। একজন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি অন্য সহ- অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। আইনের শর্তাবলী পালন করার পরে সাদামাটা কাগজে লিপিবদ্ধকৃত স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য এবং উহার ভিত্তিতে দণ্ড দেয়া যাবে।

8 MLR 136 (HC)-আসামীর স্বীকার উক্তি মূলক জবানবন্দী যথারিতি রেকর্ড করা হয় যদিও তাহা অন্য আসামীর জন্য বলিষ্ঠ স্বাক্ষ্য নয়, ইহা অন্য আসামীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাইবে যখন অন্যান্য সাক্ষ্য সরাসরি বা অবস্থার প্রেক্ষিতে সমর্থন করিবে।

7 BLT 24 (AD)-৩৪২ ধারায় অভিযুক্তকে পরীক্ষা করার সময়ে, তার নোটিশে, তৎকর্তৃক প্রদত্ত স্বীকারোক্তি আনা হলে তিনি সে সম্পর্কে কোন অভিযোগ করেননি, তাই স্বীকারোক্তি প্রকৃত ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত।

7 BLT 317 (HCD)-স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধকারী ম্যাজিস্ট্রেট (PW 13) স্বীকারোক্তির সত্যতা ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছেন, কারণ তিনি দোষস্বীকারকারী অভিযুক্ত আখর আলী পুলিশি হেফাজতে নির্যাতিত হয়েছেন কিনা বা উক্ত অভিযুক্ত দোষস্বীকার না করলেও তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হবে না সে সম্পর্কে অভিযুক্তকে সতর্ক করতে ব্যর্থ হয়েছেন। উপরন্তু দেখা যায় যে, রিমান্ড থেকে আনার পরে অভিযুক্ত তার স্বীকারোক্তি দিয়েছে যা হুমকি, বল প্রয়োগ ও শারীরিক নির্যাতনের ফল বলে সন্দেহ থাকে না।

4 BLC 386-পিডব্লিউ ৪ ও ৫-এ প্রদত্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ও সাক্ষ্যের মধ্যে বড় আকারের গরমিল ও অসামঞ্জস্যতা রয়েছে যার কারণে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধকৃত জবানবন্দীতে সঠিক জবানবন্দী নেই। তাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীটিকে সত্য বলে ধরা যাবে না।

4 BLC 386-প্রত্যাহৃত স্বীকারোক্তি:

দন্ডিত কয়েদীকে দীর্ঘ পুলিশী হেফাজতে নেওয়ার পরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বিধায় উক্ত জবানবন্দী স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কিংবা সত্য নয়, এবং যেহেতু রাষ্ট্রপক্ষীয় আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কয়েদী কোন আইনগত সহায়তা পাননি, সে কারণে উক্ত স্বীকারোক্তি বিলম্বে প্রত্যাহার করা হলেও উহা থেকে তার দোষ অনুমান করা যাবে না।

4 BLC 470-স্বীকারোক্ত মুদ্রিত ফরমে না হলেও তা গ্রহণযোগ্য:

ম্যাজিস্ট্রেট সকল আনুষ্ঠানিকতা পালন করার পরে অভিযুক্তের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী একটা টুকরা সাধারণ কাগজে যদি লিপিবদ্ধ করেন তবে উহা মুদ্রিত ফরমে লিপিবদ্ধ করা হয়নি কেবলমাত্র এই কারণে সাক্ষ্য হিসেবে অগ্রহণযোগ্য হবে না।

4 BLC 223 (AD)-স্বীকারোক্তি দেওয়ার পরে দন্ডিত কয়েদীকে মুন্সীগঞ্জ সাব-জেলে পাঠানো হয়েছিল। তাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা কালে উক্ত স্বীকারোক্তি সুনির্দিষ্টভাবে তার নোটিশে আনা হয়েছিল, কিন্তু তখন সে স্বীকারোক্তির প্রকৃতি সম্পর্কে কোন অভিযোগ করেনি। তাই বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগ উভয়ই উক্ত স্বীকারোক্তি সঠিকভাবেই সত্য ও স্বেচ্ছা প্রণোদিত বলে বিশ্বাস করেছে।